রোহিঙ্গা তালিকা যাচাইয়ে মিয়ানমারের ধীরগতি

ডেস্ক রিপোর্ট • মিয়ানমারকে চার দফায় ১ লাখ ৬ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা হস্তান্তর করলেও সেই তালিকা যাচাই-বাছাই অত্যন্ত ধীরগতিতে সারছে দেশটি। বাংলাদেশের দেওয়া এই তালিকা থেকে মাত্র ৮ হাজার ৮০০ জনকে নিজেদের বলে স্বীকার করে নিয়েছে তারা। তবে, তালিকা হস্তান্তর ও যাচাই প্রক্রিয়া চললেও কবে নাগাদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে, তা নিশ্চিত নয়।

সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারকে প্রথম দফায় ৮ হাজার ৩২ জন, দ্বিতীয় দফায় ২২ হাজার ৪৩২ জন, তৃতীয় দফায় ২৫ হাজার ৪৮ জন ও শেষ দফায় ৫০ হাজার ৫০৬ জনের তালিকা হস্তান্তর করা হয়। চার দফায় মোট ১ লাখ ৬ হাজার ১৮ জনের তালিকা দেওয়া হয় তাদের কাছে।

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক ছাড়াও মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে। সবশেষ গত ১৫ অক্টোবর ৫০ হাজার ৫০৬ জনের তালিকা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের দেওয়া তালিকা থেকে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৮ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গাকে নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার করে নিয়েছে মিয়ানমার।

মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারকে ২২ হাজার ৪৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত মিয়ানমার একবছর ধরে সেই তালিকা থেকে ২০ হাজার ৭৯৯ জনকে যাচাই-বাছাই করেছে। এই বাছাই শেষে ৩ হাজার ৪৪৫ জনকে নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার করে নিয়েছে তারা।

একদিকে রোহিঙ্গা যাচাই-বাছাইয়ে ধীরগতি, অন্যদিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দুই দফায় ব্যর্থ হলেও মিয়ানমারের দাবি, ইতোমধ্যেই ৩৫০ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে গেছেন। এছাড়া দেশটির অভিযোগ, বাংলাদেশে থাকা ৪৪৪ জন রোহিঙ্গা রাখাইনে ফিরতে আগ্রহী হলেও বাংলাদেশই তাদের ফেরত পাঠাচ্ছে না। মিয়ানমারের এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিয়ানমারকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকা দ্রুত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকেও বিষয়টি তোলা হয়েছে। তবে, মিয়ানমার যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করছে না।

রোহিঙ্গাদের তালিকা হস্তান্তর ও যাচাই বাছাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। তবে, সব রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দেওয়া হয়নি। সেজন্য আমরা তাদের সব রোহিঙ্গার তালিকা দিতে চাই। রোহিঙ্গাদের আইডেন্টিফাই করতে মিয়ানমারের জন্য যেন সহজ হয়, সেজন্যই আমরা তালিকা দেবো। এরপর তারা যাচাই-বাছাই করবে।